How to Aids? Aids First Aid Presented By SUPER TV BD এইডস কি? এইডস ও প্রাথমিক চিকিৎসা

এইডস ও প্রাথমিক চিকিৎসা




তথ্য সংগ্রহঃ-
ভুল ক্ষমা প্রার্থনায়ঃ-মো:সুমন আহাম্মেদ।


👉AIDS এইডস কি?

এইডস (AIDS) হচ্ছে এইচ.আই.ভি. (Human Immuno deficiency Virus) নামক ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট এমন এক রোগ, যা মানুষের শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস করে। এইডস (AIDS) এর পূর্ণরূপ হল Acquired Immune Deficiency Syndrome। এটি মানুষের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে দেয়। তাই এইডসে আক্রান্ত রোগী খুব সহজেই যে কোন সংক্রামক রোগে যেমন-  [নিউমোনিয়া, যক্ষ্মা, মেনিননজাইএটিস মনকি ক্যান্সারও, হতে পারে। ডায়রিয়া ইত্যাদি হতে পারে।] আক্রান্ত হতে পারেন, যা শেষ পর্যন্ত তার মৃত্যু ঘটাতে পারে। এইচআইভি সংক্রমণের পরের ধাপকেই এইডস (Acquired Immunodeficiency Syndrome) বলা হয়। এইডস এর কোন প্রতিষেধক বা কার্যকর ওষুধ এখনও আবিষ্কার হয়নি।

মানবদেহে এইচআইভি প্রবেশ করার সাথে সাথেই শরীরে এইডস এর লক্ষণ দেখা যায় না। এইচআইভি ভাইরাস শরীরে প্রবেশের এইডস হওয়া পর্যন্ত সময়ের ব্যাপ্তি সাধারণত ৬ মাস থেকে বেশ কয়েক বৎসর এমনকি কোন কোন ক্ষেত্রে ৫ থেকে ১০ বৎসর পর্যন্ত পর একজন ব্যক্তির মধ্যে এইডস এর লক্ষণ দেখা যাবে তা নির্ভর করে ঐ ব্যক্তির শারীরিক অবস্থার উপর।
এই সময়কালে এইচআইভি সংক্রমিত একজন ব্যক্তি নিজের অজান্তেই অন্য একজন সুস্থ ব্যক্তির দেহে এইচআইভি ভাইরাস ছড়িয়ে দিতে পারেন।

এই রোগ প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার অফ ডিসেস কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন বা সি ডি সি ১৯৮১ সনাক্ত করে I পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা এবং ফ্রান্স বিজ্ঞানীরা  (HIV) শনাক্ত করেন ১৯৮৪ সালে I

👉এইডস এর লক্ষণ ও উপসর্গ :-

এডইস আক্রান্ত হবার ৬ সপ্তাহ পরে কিছু অনির্দিষ্ট লক্ষন দেখা দিতে পারে যেমন- জ্বর, গলা ব্যাথা, মাথা ব্যথা ইত্যাদি। এইসব লক্ষন কোনরকম চিকিৎসা ছাড়াই আবার সেরেও যায়, সে কারণে রোগী এ ভাইরাস সম্পর্কে কোন ধারনা পায় না। এডইস কোন রকম লক্ষন ছাড়াই ৫ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত মানুষের শরীরে নিরবে অবস্থান করতে পারে।

👉সংক্রমণের প্রাথমিক পর্যায়ে সাধারণত:
➤জ্বর

➤মাথা ব্যথা

➤গলা ভাঙ্গা

➤লসিকাগ্রন্থি ফুলে উঠা (Swollen lymph glands)

➤শরীরে লালচে দানা (Rash) ইত্যাদি লক্ষণ ও উপসর্গ দেখা দেয়।

👉সংক্রমণের পরবর্তী সময় সাধারণত:

➤অস্থিসন্ধি ফুলে উঠা (Swollen lymph nodes)

➤ডায়রিয়া

➤শরীরের ওজন কমা

➤জ্বর

➤কাশি এবং শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি লক্ষণ ও উপসর্গ দেখা দেয়

👉সংক্রমণের শেষ পর্যায়ে সাধারণত:-

➤রাতের বেলা খুব ঘাম হওয়া

➤কয়েক সপ্তাহ ধরে ১০০ ফারেনহাইট (৩৮ সে.) বা এর অধিক তাপমাত্রার জ্বর অথবা কাঁপুনি

➤শুকনা কাশি এবং শ্বাস কষ্ট

➤দীর্ঘদিন ধরে ডায়রিয়া

➤মুখ অথবা জিহ্বা বেঁকে যাওয়া অথবা সাদা দাগ পড়া

➤মাথা ব্যথা

➤সবকিছু অস্পষ্ট ও বিকৃত দেখা

➤তীব্র অবসাদ অনুভব

➤তিন মাসের অধিক সময় ধরে অস্থিসন্ধি ফুলে থাকা ইত্যাদি লক্ষণ ও উপসর্গ দেখা দেয়

👉শিশুদের ক্ষেত্রে এইচআইভি’র লক্ষণ ?

➤ওজন বৃদ্ধি না পাওয়া

➤স্বাভাবিক বৃদ্ধি না হওয়া

➤হাঁটতে সমস্যা

➤মানসিক বৃদ্ধি দেরীতে হওয়া

➤কানের সংক্রমণ, নিউমোনিয়া এবং টনসিলের মতো সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যার প্রকট আকার ধারণ করা

👉কিভাবে এইডস ছড়ায় ?
        সাধারনত এইচআইভি মানবদেহের কয়েকটি নির্দিষ্ট তরল পদার্থের (রক্ত, বীর্য ও বুকের দুধ) মাধ্যমেই ছড়ায়।

➤শারীরিক সম্পর্কের মাধ্যমে অনিরাপদ যৌনমিলনের সময় অবশ্যই কনডম ব্যবহার করতে হবে।

➤এইচআইভি সংক্রমিত রক্ত আদান-প্রদানের মাধ্যমে কোন কারণে রক্ত গ্রহণের প্রয়োজন হলে রক্তদাতার রক্তে এইচআইভি আছে কি না সেটা অবশ্যই পরীক্ষা করে নিতে হবে।

➤কারো ব্যবহৃত সুচ এবং সিরিঞ্জ ব্যবহারে মাধ্যমে প্রতিবারই ইনজেকশনের নতুন সূঁচ ও সিরিঞ্জ ব্যবহার করতে হবে।

➤গর্ভবতী মা এইচআইভিতে আক্রান্ত হলে, ডেলিভারীর সময় এবং আক্রান্ত মায়ের দুধ পান করলে শিশুর এই রোগ হতে পারে। এইচআইভি/এইডস আক্রান্ত মায়ের ক্ষেত্রে, সন্তান গ্রহণ, গর্ভাবস্থা, প্রসব এবং সন্তানকে বুকের দুধ দেয়ার ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

➤শরীরের কোন অঙ্গ বা কলা প্রতিস্থাপন করলে অথবা জীবাণুমুক্ত করা হয়নি এমন সরঞ্জাম দিয়ে দাঁতের চিকিৎসা বা অপারেশন করলে।

👉কি করলে এইডস ছড়ায় না ?

➤বাতাস, পানি, খাবার কিংবা স্পর্শের মাধ্যমে এইচআইভি ছড়ায় না।

এইচআইভি আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে খাওয়া দাওয়া করলে এইচআইভি ছড়ায় না।

এইচআইভি আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত পায়খান (toilet) ব্যবহার করলে এইচআইভি ছড়ায় না।

এইচআইভি আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে হাত মিলালে এইচআইভি ছড়ায় না।

এইচআইভি আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে খেলাধূলা, কোলাকুলি করলে এইচআইভি ছড়ায় না।

এইচআইভি আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে একই থালায় ভাত খেলে এইচআইভি ছড়ায় না।

এইচআইভি আক্রান্ত ব্যক্তির সেবা করলে এইচআইভি ছড়ায় না।

এইচআইভি আক্রান্ত ব্যক্তি একই বিছানা ব্যবহার কিংবা একই পোশাক পরিধান করলেও এইচআইভি ছড়ায় না।

এইচআইভি আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি, কাশি থেকে এইচআইভি ছড়ায় না।

এইচআইভি একই পুকুরে গোসল করলে এইডস ছড়ায় না।

➤মশা কিংবা অন্য কোনো পোকা-মাকড়ের মাধ্যমেও এইডস ছড়ায় না।

👉কখন ডাক্তার দেখাবেন?

রোগের প্রাথমিক ও পরবর্তী পর্যায়ের লক্ষণ ও উপসর্গগুলো দেখা দেয়ার সাথে সাথে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

👉এইচআইভি/ এইডস আক্রান্ত হলে জীবন-যাপন পদ্ধতি:-

➤শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন না করা

➤গর্ভধারণ না করা

➤বিশেষজ্ঞ ডাক্তারকে দেখানো

➤ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন ও নির্দেশনা মেনে চলা

👉প্রতিষেধক গ্রহণ

➤সুষম খাদ্য যেমন-তাজা শাকসবজি, ফলমূল ইত্যাদি খাওয়া

➤যেসব খাবার খেলে সংক্রমণ হতে পারে যেমন-কাঁচা খাবার সেগুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকা

➤বিশুদ্ধ পানি পান করা

➤নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করা

➤পর্যাপ্ত ঘুম এবং বিশ্রাম

➤ধূমপান ও মদপান থেকে বিরত থাকা

➤হাত ভালোমত পরিষ্কার করা

👉এইডস কিভাবে প্রতিরোধ করা যায় ?

➤নিরাপদ শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন

➤এইচআইভি আক্রান্ত কারো সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করা থেকে বিরত থাকা

➤অপরিষ্কার এবং কারো ব্যবহৃত সুচ ব্যবহার না করা

➤কারো থেকে রক্ত গ্রহণ করতে হলে সেটা এইচআইভি সংক্রমিত কিনা পরীক্ষা করে দেখা

➤নিয়মিত রক্ত পরীক্ষা করা

➤এইচআইভি আক্রান্ত ব্যক্তির ব্লেড এবং টুথব্রাশ ব্যবহার না করা

➤গর্ভবতীদের ক্ষেত্রে সঠিক যত্ন নেয়া

সতর্কতার সাথে নিজের শারীরিক সুরক্ষা ও নিরাপত্তার প্রতি খেয়াল রাখা। এইডস এর সূনির্দিষ্ট কোন লক্ষণ নেই। আবার এইডস আক্রান্ত ব্যাক্তি অন্য কোন রোগে আক্রান্ত হলে সে রোগের লক্ষণ দেখা যাবে। কারো মধ্যে উপরের এক বা একাধিক লক্ষণ দেখা দিলেই নিশ্চিত হওয়া যাবে না যে তার এইডস হয়েছে। তবে, কোন ব্যক্তির এসব লক্ষণ দেখা দিলে অবশ্যই বিলম্ব না করে দ্রুত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

No comments

Theme images by Petrovich9. Powered by Blogger.