First aid for a person submerged in water, Presented By Super tv bd পানিতে ডোবা ব্যক্তির প্রাথমিক চিকিৎসা।
First aid for a Person Submerged in Water.
পানিতে ডোবা ব্যক্তির প্রাথমিক চিকিৎসা।
https://supertvbd.blogspot.com/
প্রায়ই খবর আসে, পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু। খুবই মর্মান্তিক একটি বিষয় এটি। ৯৬ শতাংশ পানিতে ডুবে মৃত্যু হয় নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের দেশগুলোতে।বেশির ভাগ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে পুকুর ও খালে; এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর মাসে।
বাংলাদেশেও প্রতিবছর পানিতে পড়ে শিশু মারা যায়। বাংলাদেশ স্বাস্থ্য ও ইনজুরি সার্ভের (বিএইচআইএস) মতে, প্রতিবছর প্রায় ১৭ হাজার শিশু মারা যায় পানিতে ডুবে, এদের বয়স এক থেকে চার বছরের মধ্যে।
আমরা যে ভুলটা করি:-
আমরা কেউ পানিতে ডুবে গেলে প্রথম যে ভুলটা করি তা হচ্ছে আতঙ্কিত হয়ে,আমাদের কর্মপন্থা ভুলে যাই।এতে ডুবে যাওয়া ব্যক্তিটিকে বাচানো সম্ভব হয়না।আতঙ্কিত না হয়ে ডুবে যাওয়া ব্যক্তিটিকে প্রথমে পানি থেকে তুলে আনতে হবে।
পানি থেকে তুলে আনার ক্ষেত্রে একটা বিষয় খুব ভালোভাবে খেয়াল রাখতে হবে,যে অনেক সময় যিনি বাচাতে যান তিনিও বিপদে পড়ে যেতে পারেন। ডুবন্ত ব্যক্তি অবলম্বন পেলেই আকড়ে ধরবে এবং উপরে উঠার চেষ্টা করবে।সে ক্ষেত্রে দেখা দিতে পারে বিপত্তি, তাই ডুবন্ত ব্যক্তির পিঠের দিক দিয়ে তার দুই বগলের জায়গা দিয়ে হাত দিয়ে ধরতে হবে তাহলে বিপদের আশংকা কম থাকবে।
পানি থেকে তোলার পর করণীয়ঃ-১➤➤প্রথমেই দেখতে হবে শ্বাস- প্রশ্বাস চালু আছে কিনা। যদি না থাকে তবে বুঝতে হবে জরুরী অবস্থা কারন রোগীর আয়ু আর মাত্র চার থেকে পাচ মিনিট।
২➤➤ পানি থেকে তোলার পর পর ই মুখে বা নাকে কোনো কিছু আটকে আছে কিনা তা দেখতে হবে। কোনোকিছু আটকে থাকলে তা পরিস্কার করতে হবে।
৩➤➤পানিতে ডুবে মৃত্যু সাধারণত শ্বাসযন্ত্র বিকল হয়ে যাওয়ার ফলে হয়। তাই যত দ্রুত সম্ভব শ্বাস প্রশ্বাস ফিরিয়ে আনতে হবে। পানিথেকে তুলে প্রথমেই মাটিতে সোজা করে শুইয়ে দিতে হবে। দেখতে হবে নাড়ি স্পন্দন আছে কি না। নাড়ি স্পন্দন এর জন্য গলার দুইপাশে দেখতে পারবেন, এডামস অ্যাপেল বলা হয় স্বরযন্ত্রের উচু অংশকে এর পাশে হাত দিলে যদি স্পন্দন পান তবে বুঝবেন যে নাড়ি স্পন্দন আছে। পর পর দুবার এভাবে শ্বাস দেওয়ার পর নাড়ি পরীক্ষা করুন।
৪➤➤প্রথমেই শ্বাসযন্ত্র চালু করতে হবে। শ্বাস-প্রশ্বাস চালুর জন্য কৃত্রিম ভাবে মুখ দিয়ে বাতাস দিতে হবে।ছোটো শিশু হলে নাখ মুখ দুইটাই মুখের ভিতর নিয়ে বাতাস দিতে হবে।আর বড় কেউ হলে নাক বন্ধ করে মুখে মুখ লাগিয়ে বাতাস দিতে হবে। শ্বাসযন্ত্র বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে বেশির ভাগ মৃত্যু ঘটে।
৫➤➤যদি গলায় হাত দিয়ে পালস না পাওয়া যায় তবে দুই হাত বুকের বা পাশে রেখে চাপ দিতে থাকতে হবে। ৩০বার বুকে চাপ দিন আর দুইবার মুখ লাগিয়ে বাতাস দিন এইভাবে চালিয়ে যেতে হবে পালস না পাওয়া পর্যন্ত। নাড়ির স্পন্দন ফিরে এলে আর বুকে চাপ দেওয়ার দরকার নেই।
এই চিকিত্সা করার সময় রোগী বমি করতে পারে। সে ক্ষেত্রে তাকে একদিকে কাত করে দিন ও নাক-মুখ পরিষ্কার করে দিন।
আবার দেখা যায় প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর ভালো হলে অনেকে ঘরে বসে থাকেন এটি করা যাবে না। চিকিৎসক এর শরণাপন্ন অবশ্যই হবেন। সচেতন হোন নিজে বাচুন অন্যকে বাচান।
পানিতে ডোবা ব্যক্তিকে উদ্ধার করার পর পরই প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে পারলে মৃত্যুর হার অনেক কমে যাবে। যেকোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষই এই চিকিৎসা দিতে পারেন।
👉রোগীর জ্ঞান ফিরে এলেও তাকে হাসপাতালে নিতে হবে। কেননা, তাকে অতি দ্রুত অক্সিজেন দেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে।
আর যদি শিশু হয় তবে:-
পানিতে ডুবে যাওয়া শিশুকে অনেক সময় উদ্ধার করা গেলেও দেখা যায় তাকে বাঁচানো যায় না। এর প্রধান কারণ হচ্ছে অজ্ঞতা। অনেকে জানেই না, শিশু পানিতে ডুবে গেলে বা পানি খেলে কী করতে হবে। চিকিৎসকদের মতে, সঠিক জ্ঞান থাকলে পানিতে ডুবে গেলেও শিশুকে সহজেই বাঁচানো সম্ভব। প্রথমেই যা যা করতে হবে---
১➤➤ শিশু যেহেতু বড় মানুষের মতো সামর্থ্যবান নয় এবং বেশিক্ষণ শ্বাস না নিয়ে বাঁচতে পারে না, তাই পানিতে ডুবে যাওয়ার পর তাকে যত দ্রুত সম্ভব পানি থেকে উদ্ধার করতে হবে।
২.➤➤ উদ্ধারের সঙ্গে সঙ্গে শিশুকে শুকনা স্থানে নিয়ে আসতে হবে।
৩.➤➤ প্রথমেই কাত করে শুইয়ে দিতে হবে এবং পিঠে আস্তে আস্তে চাপড় দিয়ে পানি বের করার চেষ্টা করতে হবে।
৪.➤➤ এরপর দেখতে হবে শিশুর শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিকভাবে চলছে কি না এবং নাড়ির গতি ঠিক আছে কি না। না চললে তার মুখের সঙ্গে মুখ লাগিয়ে কৃত্রিমভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এর আগে তার নাক-মুখ পরিষ্কার করে দিতে হবে।
৫.➤➤ শিশু যদি বমি করতে চায়, তাহলে তাকে বমি করতে সহায়তা করা উচিত। এতে শিশুর ভেতরের পানি বেরিয়ে আসে। তবে বমি করানোর সময় তাকে কাত করে ধরতে হবে।
৬.➤➤ সব ভেজা কাপড় দ্রুত খুলে ফেলে গরম কাপড় দিয়ে পুরো শরীর ঢেকে দিতে হবে।
৭.➤➤ পানিতে ডুবে যাওয়ার পর শিশু মারা যাওয়ার আরও একটি বড় কারণ হচ্ছে শিশুর ভয় পাওয়া। শিশুকে উদ্ধারের পর পর যদি সম্ভব হয় তাকে অভয় দিতে হবে। তবে পানিতে শিশু ডুবে যাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো বিষয়ে কিছু না জেনে নিজে নিজে কিছু না করাই উত্তম।
৮.➤➤ পানিতে ডোবা শিশুকে উদ্ধারের পর যত দ্রুত সম্ভব তাকে কাছের হাসপাতালে নিয়ে দ্রুত জরুরি চিকিৎসা দিতে হবে। কেননা, ডুবে যাওয়ার পর থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এই সময়ের মধ্যে শিশু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে, বুকে সংক্রমণ দেখা দিতে পারে এবং হার্টফেল করতে পারে।
ওপরের এই কয়েকটি বিষয় জানা থাকলে পানিতে ডুবে যাওয়ার পরও আপনার শিশুকে আবার ফিরে পেতে পারেন।
🌹===============================🌷🌷🌷===============================🌹
No comments